সংবাদ শিরোনাম ::
ধর্ম প্রাণ মুসলিমদের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন রাজশাহী বিভাগীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ গোমস্তাপুরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী জেলা শাখার উদ্যোগে ওয়ার্ড সভাপতি সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত গোমস্তাপুরে অজ্ঞান পার্টি মেসার্স ভাই ভাই ভ্যারাইটিজ এন্ড ক্রোকারীজ এর ২০ হাজার টাকা নিয়ে গেলো লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং লিবার্টির সভাপতি হলেন নবীনগরের শরিফুল ইসলাম গোমস্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত গোমস্তাপুরে নদীতে গোসলে নেমে যুবকের মৃত্যু গোমস্তাপুরে এক্সটেন্ডেড কমিউনিটি ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট-ড্রট (ইসিসিসিপি-ড্রট)MAR স্থাপনের উদ্বোধন নাচোলে কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের আয়োজনে পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত রুট অফ লাইফ এর উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি খাবার স্যালাইন ও ক্যাপ বিতরণ

রাজশাহীতে গমের বাম্পার ফলন, বেড়েছে চাষ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫ ৩৯ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান : রবি শস্য হিসেবে ঋতু রাজ বসন্তের বাংলা বঙ্গাব্দের শেষ মাস চৈত্রে গমের ফসল ওঠে। ভাত বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য হলেও গমের রুটিও অন্যতম। এই হিসাবে, রুটির প্রধান উপাদান গমেরও গুরুত্ব বেড়েছে। এ কারণে ধান, আলু ও সবজির পাশাপাশি আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রাজশাহী অঞ্চলে এবার গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে গম কাটা-মাড়াইয়ের কাজ চলছে। কৃষি অফিস বলছে, এবার গত বছরের তুলনায় গমের চাষ বেড়েছে।

রাজশাহী কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গত বছরের তুলনায় এবার ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে বেড়েছে গম চাষ। গত বছর রাজশাহী অঞ্চলে গমের আবাদ হয়েছিল ৯২ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৮৮ হাজার ২৬৮ মেট্রিক টন। এ বছর আবাদ হয়েছে ৯৩ হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমিতে। এবারের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৪৮ মেট্রিক টন। সেই বিবেচনায়, এবার গমের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি গম উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগ জানায়, তুলনামূলকভাবে খরচ কম এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন গমের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন হয়েছে। গম চাষে খরচ কম, এবং অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ার আশায় কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে। একসময় রাজশাহী অঞ্চলে গম চাষে কৃষকরা আগ্রহ হারালেও, কয়েক বছর ধরে গমের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পবা উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের গম চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া উন্নত জাতের গম বীজ ও সার বিনামূল্যে পেয়েছিলেন। এবার তিনি তিন বিঘা জমিতে গম চাষ করছেন। কাটা-মাড়াই শেষে প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ২০ মণ গমের ফলন পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।

বড়গাছী ইউনিয়নের কৃষক শরিফুল আলম জানান, এ বছর তিনি ৮ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দিয়েছেন। তিন বিঘা জমির গম কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে, যার ফলনে বিঘাপ্রতি সাড়ে ১৫ মণ গম পেয়েছেন তিনি।

বাঘার খুঁদিছয়ঘটি গ্রামের শাহজাহান আলী, জামু ও হাবিবুর বলেন, গতবারের তুলনায় এবারের গমের ফলন সন্তোষজনক হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ক্ষেতে সার-কীটনাশকের খরচ কম হয়েছে। তারা বলেন, যে পরিমাণ ফলন হয়েছে, তাতে তারা খুশি।

পবা উপজেলার পাকুড়িয়ার এলাকার আরেক গম চাষি জসিম উদ্দিন বলেন, গম চাষে এবারে পাঁচ বিঘা জমিতে প্রায় বিঘাপ্রতি সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি ধারণা করছেন, গমের ফলন ভালো হবে এবং বাজারে গম বিক্রি করে বেশি দাম পাওয়া যাবে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা জানান, রবি ফসলের মধ্যে গম লাভজনক আবাদ। কৃষকদের গম চাষে আগ্রহী করতে তালিকাভুক্ত চাষিদের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী এবং উচ্চফলনশীল উন্নত জাতের গম বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া, গম চাষ করতে কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায়, গমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

রাজশাহীতে গমের বাম্পার ফলন, বেড়েছে চাষ

আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান : রবি শস্য হিসেবে ঋতু রাজ বসন্তের বাংলা বঙ্গাব্দের শেষ মাস চৈত্রে গমের ফসল ওঠে। ভাত বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য হলেও গমের রুটিও অন্যতম। এই হিসাবে, রুটির প্রধান উপাদান গমেরও গুরুত্ব বেড়েছে। এ কারণে ধান, আলু ও সবজির পাশাপাশি আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রাজশাহী অঞ্চলে এবার গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে গম কাটা-মাড়াইয়ের কাজ চলছে। কৃষি অফিস বলছে, এবার গত বছরের তুলনায় গমের চাষ বেড়েছে।

রাজশাহী কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গত বছরের তুলনায় এবার ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে বেড়েছে গম চাষ। গত বছর রাজশাহী অঞ্চলে গমের আবাদ হয়েছিল ৯২ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৮৮ হাজার ২৬৮ মেট্রিক টন। এ বছর আবাদ হয়েছে ৯৩ হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমিতে। এবারের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৪৮ মেট্রিক টন। সেই বিবেচনায়, এবার গমের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি গম উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগ জানায়, তুলনামূলকভাবে খরচ কম এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন গমের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন হয়েছে। গম চাষে খরচ কম, এবং অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ার আশায় কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে। একসময় রাজশাহী অঞ্চলে গম চাষে কৃষকরা আগ্রহ হারালেও, কয়েক বছর ধরে গমের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পবা উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের গম চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া উন্নত জাতের গম বীজ ও সার বিনামূল্যে পেয়েছিলেন। এবার তিনি তিন বিঘা জমিতে গম চাষ করছেন। কাটা-মাড়াই শেষে প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ২০ মণ গমের ফলন পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।

বড়গাছী ইউনিয়নের কৃষক শরিফুল আলম জানান, এ বছর তিনি ৮ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দিয়েছেন। তিন বিঘা জমির গম কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে, যার ফলনে বিঘাপ্রতি সাড়ে ১৫ মণ গম পেয়েছেন তিনি।

বাঘার খুঁদিছয়ঘটি গ্রামের শাহজাহান আলী, জামু ও হাবিবুর বলেন, গতবারের তুলনায় এবারের গমের ফলন সন্তোষজনক হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ক্ষেতে সার-কীটনাশকের খরচ কম হয়েছে। তারা বলেন, যে পরিমাণ ফলন হয়েছে, তাতে তারা খুশি।

পবা উপজেলার পাকুড়িয়ার এলাকার আরেক গম চাষি জসিম উদ্দিন বলেন, গম চাষে এবারে পাঁচ বিঘা জমিতে প্রায় বিঘাপ্রতি সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি ধারণা করছেন, গমের ফলন ভালো হবে এবং বাজারে গম বিক্রি করে বেশি দাম পাওয়া যাবে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা জানান, রবি ফসলের মধ্যে গম লাভজনক আবাদ। কৃষকদের গম চাষে আগ্রহী করতে তালিকাভুক্ত চাষিদের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী এবং উচ্চফলনশীল উন্নত জাতের গম বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া, গম চাষ করতে কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায়, গমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।