সংবাদ শিরোনাম ::
গোমস্তাপুরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী জেলা শাখার উদ্যোগে ওয়ার্ড সভাপতি সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত গোমস্তাপুরে অজ্ঞান পার্টি মেসার্স ভাই ভাই ভ্যারাইটিজ এন্ড ক্রোকারীজ এর ২০ হাজার টাকা নিয়ে গেলো লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং লিবার্টির সভাপতি হলেন নবীনগরের শরিফুল ইসলাম গোমস্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত গোমস্তাপুরে নদীতে গোসলে নেমে যুবকের মৃত্যু গোমস্তাপুরে এক্সটেন্ডেড কমিউনিটি ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট-ড্রট (ইসিসিসিপি-ড্রট)MAR স্থাপনের উদ্বোধন নাচোলে কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের আয়োজনে পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত রুট অফ লাইফ এর উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি খাবার স্যালাইন ও ক্যাপ বিতরণ রাজশাহী ৫ সংসদীয় আসনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আলম

ধর্মঘটের মধ্যেও সচল বিএনপি নেতার পেট্রোল পাম্প

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৫:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

তেল বিক্রির কমিশন ন্যূনতম ৭ শতাংশ করাসহ ১০ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ আধাবেলা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তবে দেশব্যাপী চলা ধর্মঘটের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অন্যান্য পেট্রোল পাম্প বন্ধ থাকলেও ধর্মঘট না মেনে পাম্পে তেল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, বিএনপি নেতা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেনের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধর্মঘট মেনে অন্যান্য পেট্রোল পাম্প বন্ধ থাকলেও সচল রাখা হয়েছে দলের সীধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় দল থেকে বহিস্কৃত বিএনপি নেতা আশরাফ হোসেন আলিমের মালিকানাধীন পেট্রোল পাম্প। অন্যান্য জায়গায় তেল না পেয়ে ভীড় করছেন সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন আলিমের মেসার্স রাইহান ফিলিং স্টেশনে। লাইন ধরে তেল নিতে দেখা গেছে মোটরসাইকেল আরোহীদের।

এনিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলার পেট্রোল পাম্প মালিকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মালিক জানান, নায্য দাবি আদায়ে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ সকাল রবিবার (২৫ মে) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পেট্রোল পাম্প বন্ধ এবং ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রাখার সীধান্ত নিয়েছে। আমরা সংগঠনের নির্দেশনা মেনে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সকাল থেকে পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছি। কিন্তু আমাদের সংগঠনেরই জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন আলিমের পাম্প সচল রাখা হয়েছে।

পেট্রোল পাম্প মালিকরা আরও বলেন, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে লোকসান করে আমরা পাম্প বন্ধ রেখেছি। কিন্তু তিনি (বিএনপি নেতা আশরাফ হোসেন আলিম) তেল বিক্রি করছেন। বিষয়টি খুবই দু:খজনক। তিনি সংগঠনের নেতা হয়ে এমন করতে পারেন না। এনিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পেট্রোল পাম্প মালিকরা।

মটরসাইকেল আরোহী মেহেদী হাসান জানান, আশপাশের কয়েকটি পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখা আছে। সেখানে ঘুরে ঘুরেও তেল না পেয়ে মেসার্স রাইহান ফিলিং স্টেশনে এসেছি। এখানেই একমাত্র তেল পাওয়া যাচ্ছে।

জানা যায়, তেল বিক্রির কমিশন নূন্যতম ৭ শতাংশ করাসহ ১০ দফা দাবিতে এই ধর্মঘট করেছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ। এছাড়াও তারা আরও দাবি জানান, সওজ অধিদপ্তরের ইজারা, ভূমির ইজারা মাশুল পূর্বের ন্যায় বহাল রাখতে হবে। পাশাপাশি পাম্পের সংযোগ সড়কের ইজারা প্রাপ্ত ভূমির নবায়নকালীন সময়ে ইজারা নবায়নের আবেদনের সাথে নির্ধারিত ইজারা মাশুলের পে-অর্ডার, সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরে জমা প্রদান করলে উহার ইজারা নবায়ন বলিয়া বিবেচিত হওয়ার বিধান করতে হবে।

অন্যান্য দাবিগুলো হলো, বিএসটিআই কর্তৃক পূর্বের ন্যায় শুধু ডিসপেন্সিং ইউনিটি, ষ্টেমপিং এবং পরিমাণ যাচাইয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করিবেন এবং ফিস সমূহ পূর্বের ন্যায় করতে হবে। আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিব্রেশন, ডিপ রড পরীক্ষণ ফিস এবং নিবন্ধন প্রথা বাতিল করতে হবে। যেহেতু পেট্রোল পাম্প কোন শিল্প নয় ইহা কমিশন এজেন্ট ভিত্তিক ব্যবসা তাই পেট্রোল পাম্পের ক্ষেত্রে পরিবেশ, বিআরসি, কলকারখানা এবং ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স বা নিবন্ধন বিধান বাতিল করতে হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুমোদন বিহীন এবং অবৈধভাবে ঘরের মধ্যে এবং খোলা স্থানে যত্রতত্র মেশিন স্থাপন পূর্বক অবৈধভাবে জ্বালানী তেল বিক্রয় বন্ধ করতে হবে।

পেট্রোল পাম্প মালিকরা দাবি জানান, বিপণন কোম্পানী থেকে ডিলারশীপ ছাড়া সরাসরি তেল বিক্রয় বন্ধ করতে হবে। ট্যাংকলরী চালক সংকট থেকে উত্তরণে ট্যাংকলরী চালকদের লাইসেন্স নবায়ন এবং নতুন লাইসেন্স ইস্যু সহজতর করতে হবে। গাড়ীর কাগজপত্র পরীক্ষার নামে রাস্তায় যত্রতত্র ট্যাংকলরী থামানো যাবে না। তেলের ডিপো গেটে ট্যাংকলরীর কাগজপত্র পরীক্ষার সরকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়াও সকল ট্যাংকলরীর জন্য আন্তজেলা রুট পারমিট ইস্যু করতে হবে।

এদিকে, ধর্মঘটের মধ্যেও নিজের পেট্রোল পাম্প সচল রাখার বিষয়টি অবগত নয় বলে জানান, গোমস্তাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন আলিম। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ধর্মঘটের মধ্যে পেট্রোল পাম্প সচল রাখার সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ধর্মঘটের মধ্যেও সচল বিএনপি নেতার পেট্রোল পাম্প

আপডেট সময় : ০৯:৪৫:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

 

তেল বিক্রির কমিশন ন্যূনতম ৭ শতাংশ করাসহ ১০ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ আধাবেলা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তবে দেশব্যাপী চলা ধর্মঘটের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অন্যান্য পেট্রোল পাম্প বন্ধ থাকলেও ধর্মঘট না মেনে পাম্পে তেল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, বিএনপি নেতা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেনের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধর্মঘট মেনে অন্যান্য পেট্রোল পাম্প বন্ধ থাকলেও সচল রাখা হয়েছে দলের সীধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় দল থেকে বহিস্কৃত বিএনপি নেতা আশরাফ হোসেন আলিমের মালিকানাধীন পেট্রোল পাম্প। অন্যান্য জায়গায় তেল না পেয়ে ভীড় করছেন সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন আলিমের মেসার্স রাইহান ফিলিং স্টেশনে। লাইন ধরে তেল নিতে দেখা গেছে মোটরসাইকেল আরোহীদের।

এনিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলার পেট্রোল পাম্প মালিকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মালিক জানান, নায্য দাবি আদায়ে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ সকাল রবিবার (২৫ মে) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পেট্রোল পাম্প বন্ধ এবং ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রাখার সীধান্ত নিয়েছে। আমরা সংগঠনের নির্দেশনা মেনে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সকাল থেকে পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছি। কিন্তু আমাদের সংগঠনেরই জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন আলিমের পাম্প সচল রাখা হয়েছে।

পেট্রোল পাম্প মালিকরা আরও বলেন, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে লোকসান করে আমরা পাম্প বন্ধ রেখেছি। কিন্তু তিনি (বিএনপি নেতা আশরাফ হোসেন আলিম) তেল বিক্রি করছেন। বিষয়টি খুবই দু:খজনক। তিনি সংগঠনের নেতা হয়ে এমন করতে পারেন না। এনিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পেট্রোল পাম্প মালিকরা।

মটরসাইকেল আরোহী মেহেদী হাসান জানান, আশপাশের কয়েকটি পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখা আছে। সেখানে ঘুরে ঘুরেও তেল না পেয়ে মেসার্স রাইহান ফিলিং স্টেশনে এসেছি। এখানেই একমাত্র তেল পাওয়া যাচ্ছে।

জানা যায়, তেল বিক্রির কমিশন নূন্যতম ৭ শতাংশ করাসহ ১০ দফা দাবিতে এই ধর্মঘট করেছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ। এছাড়াও তারা আরও দাবি জানান, সওজ অধিদপ্তরের ইজারা, ভূমির ইজারা মাশুল পূর্বের ন্যায় বহাল রাখতে হবে। পাশাপাশি পাম্পের সংযোগ সড়কের ইজারা প্রাপ্ত ভূমির নবায়নকালীন সময়ে ইজারা নবায়নের আবেদনের সাথে নির্ধারিত ইজারা মাশুলের পে-অর্ডার, সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরে জমা প্রদান করলে উহার ইজারা নবায়ন বলিয়া বিবেচিত হওয়ার বিধান করতে হবে।

অন্যান্য দাবিগুলো হলো, বিএসটিআই কর্তৃক পূর্বের ন্যায় শুধু ডিসপেন্সিং ইউনিটি, ষ্টেমপিং এবং পরিমাণ যাচাইয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করিবেন এবং ফিস সমূহ পূর্বের ন্যায় করতে হবে। আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিব্রেশন, ডিপ রড পরীক্ষণ ফিস এবং নিবন্ধন প্রথা বাতিল করতে হবে। যেহেতু পেট্রোল পাম্প কোন শিল্প নয় ইহা কমিশন এজেন্ট ভিত্তিক ব্যবসা তাই পেট্রোল পাম্পের ক্ষেত্রে পরিবেশ, বিআরসি, কলকারখানা এবং ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স বা নিবন্ধন বিধান বাতিল করতে হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুমোদন বিহীন এবং অবৈধভাবে ঘরের মধ্যে এবং খোলা স্থানে যত্রতত্র মেশিন স্থাপন পূর্বক অবৈধভাবে জ্বালানী তেল বিক্রয় বন্ধ করতে হবে।

পেট্রোল পাম্প মালিকরা দাবি জানান, বিপণন কোম্পানী থেকে ডিলারশীপ ছাড়া সরাসরি তেল বিক্রয় বন্ধ করতে হবে। ট্যাংকলরী চালক সংকট থেকে উত্তরণে ট্যাংকলরী চালকদের লাইসেন্স নবায়ন এবং নতুন লাইসেন্স ইস্যু সহজতর করতে হবে। গাড়ীর কাগজপত্র পরীক্ষার নামে রাস্তায় যত্রতত্র ট্যাংকলরী থামানো যাবে না। তেলের ডিপো গেটে ট্যাংকলরীর কাগজপত্র পরীক্ষার সরকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়াও সকল ট্যাংকলরীর জন্য আন্তজেলা রুট পারমিট ইস্যু করতে হবে।

এদিকে, ধর্মঘটের মধ্যেও নিজের পেট্রোল পাম্প সচল রাখার বিষয়টি অবগত নয় বলে জানান, গোমস্তাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন আলিম। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ধর্মঘটের মধ্যে পেট্রোল পাম্প সচল রাখার সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখছি।