তানোরে সুস্থ মানুষকে ভুয়া প্রতিবন্ধী বানিয়ে ভাতা আত্মসাৎ!
- আপডেট সময় : ০৫:০১:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫ ১৭ বার পড়া হয়েছে

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান : রাজশাহীর তানোরে সরকারি ভাতা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সুস্থ মানুষকে ‘প্রতিবন্ধী’ সাজিয়ে ভুয়া সনদ বানানোর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার মূলহোতা হিসেবে নাম এসেছে ২ নম্বর বাধাইড় ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী পলি আক্তারের।
সচেতন নাগরিক সাদিউর রহমান এ বিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম নিজের সুস্থ-সবল পিতা নুরুল ইসলাম, মা জাহানারা বেগম এবং স্ত্রী পলি আক্তারকে দৃষ্টি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সাজিয়ে ভুয়া সনদ তৈরি করিয়ে দেন এবং সরকারপ্রদত্ত ভাতা উত্তোলন করেন।
এছাড়া আরও ১৭ জন সুস্থ ব্যক্তি ও ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি একইভাবে ভুয়া সনদ নিয়ে প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণ করছেন। সবার স্থায়ী ঠিকানা—গ্রাম: শিবরামপুর, ডাকঘর: তেলোপাড়া, ইউনিয়ন: ২ নম্বর বাধাইড়, ওয়ার্ড: ৮, থানা: তানোর, জেলা: রাজশাহী।
অভিযোগে আরও বলা হয়, জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ভুয়া সনদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০০০ থেকে ৭০০০ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। এতে প্রকৃত প্রতিবন্ধীরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এক নজিরবিহীন তথ্য উঠে এসেছে দরিদ্র দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সুশীল নামের এক ব্যক্তিকে ঘিরে। তাকে একটি সনদের জন্য ৫০০০ টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। তিনি ৪০০০ টাকা দেওয়ার পরেও এখনো পর্যন্ত সনদ পাননি।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জানান, “অভিযোগটি গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রমাণ মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী পলি আক্তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সব কিছু নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে, কোনো ঘুষ নেওয়া হয়নি।”
তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন, “নিয়ম অনুযায়ী হলে একজন সুস্থ মানুষ কীভাবে প্রতিবন্ধী সনদ পান? আর প্রকৃত প্রতিবন্ধী টাকা দিয়েও কেন বঞ্চিত হন?”
এ বিষয়ে তানোর ইউএনও বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন। প্রমাণ মিললে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই প্রতারণা ও দুর্নীতির ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর দাবি, এ ধরনের জঘন্য অপরাধের দ্রুত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর অসহায় জনগণের প্রাপ্য সুবিধা ছিনিয়ে নিতে না পারে।






















