সংবাদ শিরোনাম ::
১৮ শিক্ষকের ১২ জনকে বাদ দিয়ে উদ্বোধন ওরিয়েন্টেশন ক্লাস
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময় : ০৫:০০:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩৬ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি মহাবিদ্যালয়ে ওরিয়েন্টেশন ক্লাস শিক্ষকের ১২ জনকে বাদ দিয়ে উদ্বোধন করা হলো।
জানা যায়, সারাদেশব্যাপী ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণীর প্রথম বা ওরিয়েন্টেশন ক্লাস ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সোমবার সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার নির্দেশনা দেয় শিক্ষা বিভাগ। তারই আলোকে ১৫ সেপ্টেম্বর সোমবার বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি মহাবিদ্যালয় ওরিয়েন্টেশন ক্লাস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস কিভাবে কখন উদ্বোধন করা হবে সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কলেজে কোন প্রকার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৪ সেপ্টেম্বর কলেজ চলাকালীন সময়েও এই ১২ জন শিক্ষকসহ অন্যান্য কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরাও জানেননা যে, ১৫ তারিখ ক্লাস উদ্বোধন ছাড়া আর কি হবে। ১৫ তারিখ সকালে কলেজে পৌছে শিক্ষকরা দেখতে পান যে, কলেজ মাঠে বিশাল মঞ্চ এবং গ্যালারী তৈরী করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে মঞ্চের জন্য কোন অতিথি ছিলনা। একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা গ্যালারীতে আসন গ্রহণ করার পর সকাল ১১টার দিকে অধ্যক্ষ মোঃ এজাবুল শিক্ষক মিলনায়তনে গিয়ে সবাইকে অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ জানান এবং দুপুরে সকল শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদেরসহ তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে এই শিক্ষকদের তাৎক্ষণিক দাওয়াত দেন। এ সময় শিক্ষকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং এমন আড়ম্বরপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান করার বিষয়টি কেন আলোচনার মাধ্যমে জানানো বা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি তার সঠিক জবাব দিতে না পারায় ১২ শিক্ষক তার অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। তবে অনুষ্ঠান চলাকালীন তারা কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে অবস্থান করেন।
এ বিষয়ে পৌরনীতি বিষয়ের সহকারী অধ্যপক মোঃ জোহরুল ইসলাম বলেন, সকালেই আমার ক্লাস ছিল তাই কলেজে গিয়ে দেখি বিশাল প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে, যা আমি আজ সকাল পর্যন্ত জানতামনা। ইসলাম শিক্ষার সহকারী অধ্যাপক মোঃ দুরুল হোদা জানান, জুলাই আন্দোলনের পর থেকে পলাতক থাকা অধ্যক্ষ এক বছর পর কলেজে এসে সেই আওয়ামী আমলের মতই স্বেচ্ছাচারিতায় মেতে উঠেছেন। বাংলা বিষয়ের শিক্ষক মোহাঃ জোনাব আলী জানান, কলেজের ২০২৫ সালে বোর্ড পরীক্ষা দেয়া কিছু ছাত্রলীগপন্থি শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে অধ্যক্ষ এজাবুল কলেজে তার রাম রাজত্ব চালানোর নমুনা হিসেবে এই অনুষ্ঠান। কারণ তিনি এক বছর পর পিছন দরজা দিয়ে কলেজে প্রবেশ করে তার অবস্থানকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন কৌশল ও নাটক করে চলেছেন। জুলাই মাসে কলেজে প্রবেশের সুযোগ নিয়ে মাঝে মধ্যে তিনি কলেজ আসেন এবং সেই আগের মত ষঢ়যন্ত্র করা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তিনি শিক্ষার্থীদের পক্ষে রাখার জন্য তাদের নিয়ে একটি বার্ষিক ভোজ করবেন বলে আগস্ট মাসের ১ তারিখে একটি নোটিশ প্রদান করেন। এজন্য তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে খেলাধুলার আয়োজন করেন। সেই সময় থেকে বার্ষিক ভোজের কয়েকটি তারিখও পরিবর্তন করা হয়। খেলাধূলার নামে সেই সময় থেকে শিক্ষার্থীর ক্লাস করা ছেড়ে দেয় এবং এক সময়ের অধ্যক্ষের বাস করা কক্ষে আড্ডা দিয়ে আসছে। কলেজের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত অনেক তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাবে। কয়েকজন আওয়ামী পন্থি ও আওয়ামী আমলের সুযোগ-সুবিধা ভোগী শিক্ষক নিয়ে সেই আগের ধারাবাহিকতা হিসেবে অন্যান্য দায়িত্বশীল শিক্ষকদের অপমানিত, অবাঞ্ছিত ও অবহেলার মাধ্যমে তিনি তার স্বৈরাচারী মনোভাব বাস্তবায়ন করে চলেছেন। তারই বহির্প্রকাশ এই ওরিয়েন্টেশন ক্লাস। অনুষ্ঠানের মঞ্চে মাত্র কয়েকজন শিক্ষক থাকায় শিক্ষার্থীরা হতাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, এত কম শিক্ষক এই কলেজে এটা আমাদের জানা ছিলনা।
উল্লেখ্য যে, আওয়ামী আমলের ক্ষমতাধর ও স্বেচ্ছাচারী এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগের তদন্ত হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অধ্যক্ষ এক বছর পর কলেজে প্রবেশ করলেও তার অফিস কক্ষ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীরা তালাবদ্ধ করে চাবি জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেন। ফলে আইনগতভাবে তার অফিস কক্ষ এখনো তালাবদ্ধ রয়েছে






















