সংবাদ শিরোনাম ::
তারেক রহমানের একত্রিশ দফার লিফলেট বিতরণ করেন আব্দুস সালাম তুহিন  চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ এর বিএনপির এমপি পদপ্রার্থী ইঞ্জিঃ মাসুদের বাড়ি -বাড়ি গিয়ে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ভুয়া ফেসবুক পেইজে গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদ মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাজনের সুশাসনের ডাক: রাজশাহী-৫ এ জামায়াত প্রার্থী নুরজ্জামান লিটনের গণসংযোগ ও সমাবেশ। গোদাগাড়ীতে আটক সোনার বারকে ঘিরে ধোঁয়াশা তানোরে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মিলন মেলা নাইস গার্ডেন পার্কে অনুষ্ঠিত হবে আপনারা সকলে আমন্ত্রিত! গোমস্তাপুর আড্ডা থেকে নিখোঁজের দেড় মাসেও সন্ধান মেলেনি আজাহারের রাজশাহী-৬: বিএনপির মনোনয়ন যুদ্ধে এগিয়ে কে? বিদ্যুৎ সার্কিটে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে জামায়াতের সহায়তা প্রদান 📰 রাজশাহী-৫ আসনে গণজোয়ার: বেলপুকুরে জামায়াত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা

তানোরে আমন ধানে কারেন্ট পোকার হানা, দিশেহারা কৃষকরা, নেই কৃষি কর্মকর্তার সহায়তা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৪১:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৮৯ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

 

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান : রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আমন ধানে হঠাৎ করে ভয়াবহ ‘কারেন্ট পোকার’ আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা। ফলে প্রান্তিক কৃষকরা চরম হতাশা ও দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা না মিললেও, কৃষকরা বাধ্য হয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন কীটনাশকের দোকানে। সেখানে দোকানদারের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক কিনে বারবার প্রয়োগ করছেন তারা, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না। অনেক দোকানে লাইসেন্স না থাকলেও নির্বিঘ্নে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক।

কৃষকদের অভিযোগ, এসব দোকানদার অকার্যকর বা সন্দেহজনক মানের কীটনাশক ধরিয়ে দিচ্ছেন, আর তা কোনো তদারকিই করছে না কৃষি বিভাগ। শিবরামপুর গ্রামের কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, “আমি এখনও পর্যন্ত কোনো কৃষি কর্মকর্তাকে মাঠে দেখিনি। কীটনাশক দোকানদার যা বলছে, তাই কিনে স্প্রে করছি, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না।”

তানোর পৌরসভার ঠাকুরপুকুর গ্রামের শাহজাহান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “ধানে পোকার আক্রমণ দিনদিন বাড়ছে। কী করব বুঝতে পারছি না।” করিমপুর গ্রামের কৃষক ওয়াহেদুল জানান, “কারেন্ট পোকার এমন আক্রমণ আগে কখনো দেখিনি। যেভাবে ওষুধ স্প্রে করছি, তাতে খরচই উঠে আসবে কি না, সন্দেহ। বাজারে কীটনাশক এত বেশি যে কোনটা আসল আর কোনটা নকল, বোঝা মুশকিল হয়ে গেছে।

কৃষকরা জানান, আমন রোপণের সময় পানি সমস্যায় না পড়লেও সার ও পটাশের সংকট ও অতিরিক্ত দামে চাষাবাদ করেছেন তারা। তারপরও তারা আশা হারাননি। কিন্তু হঠাৎ করে কারেন্ট পোকার এমন আক্রমণে স্বপ্নের ফসল চোখের সামনে নষ্ট হতে দেখে অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

এদিকে, কৃষি বিভাগের ভূমিকাও এ পরিস্থিতিতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তাদের মাঠে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কৃষি অফিসে গেলেও কোনো কার্যকর পরামর্শ বা সহযোগিতা মিলছে না।

এ বিষয়ে তানোর উপজেলা কৃষি অফিসের মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় তার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। *বিশেষজ্ঞরা বলছেন*, সময়মতো যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে পোকার আক্রমণ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। একই সঙ্গে তারা কৃষকদের ভেজাল ও নকল কীটনাশক থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং যথাযথ তদারকির জন্য স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান, দ্রুত মাঠে কৃষি কর্মকর্তাদের সক্রিয় করা, লাইসেন্সবিহীন কীটনাশকের দোকান বন্ধ এবং কৃষকদের মাঝে কার্যকর ও নির্ভরযোগ্য কীটনাশকের সরবরাহ নিশ্চিত করা। তা না হলে, এ বছর তানোরে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

তানোরে আমন ধানে কারেন্ট পোকার হানা, দিশেহারা কৃষকরা, নেই কৃষি কর্মকর্তার সহায়তা

আপডেট সময় : ০৫:৪১:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

 

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান : রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আমন ধানে হঠাৎ করে ভয়াবহ ‘কারেন্ট পোকার’ আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা। ফলে প্রান্তিক কৃষকরা চরম হতাশা ও দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা না মিললেও, কৃষকরা বাধ্য হয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন কীটনাশকের দোকানে। সেখানে দোকানদারের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক কিনে বারবার প্রয়োগ করছেন তারা, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না। অনেক দোকানে লাইসেন্স না থাকলেও নির্বিঘ্নে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক।

কৃষকদের অভিযোগ, এসব দোকানদার অকার্যকর বা সন্দেহজনক মানের কীটনাশক ধরিয়ে দিচ্ছেন, আর তা কোনো তদারকিই করছে না কৃষি বিভাগ। শিবরামপুর গ্রামের কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, “আমি এখনও পর্যন্ত কোনো কৃষি কর্মকর্তাকে মাঠে দেখিনি। কীটনাশক দোকানদার যা বলছে, তাই কিনে স্প্রে করছি, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না।”

তানোর পৌরসভার ঠাকুরপুকুর গ্রামের শাহজাহান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “ধানে পোকার আক্রমণ দিনদিন বাড়ছে। কী করব বুঝতে পারছি না।” করিমপুর গ্রামের কৃষক ওয়াহেদুল জানান, “কারেন্ট পোকার এমন আক্রমণ আগে কখনো দেখিনি। যেভাবে ওষুধ স্প্রে করছি, তাতে খরচই উঠে আসবে কি না, সন্দেহ। বাজারে কীটনাশক এত বেশি যে কোনটা আসল আর কোনটা নকল, বোঝা মুশকিল হয়ে গেছে।

কৃষকরা জানান, আমন রোপণের সময় পানি সমস্যায় না পড়লেও সার ও পটাশের সংকট ও অতিরিক্ত দামে চাষাবাদ করেছেন তারা। তারপরও তারা আশা হারাননি। কিন্তু হঠাৎ করে কারেন্ট পোকার এমন আক্রমণে স্বপ্নের ফসল চোখের সামনে নষ্ট হতে দেখে অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

এদিকে, কৃষি বিভাগের ভূমিকাও এ পরিস্থিতিতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তাদের মাঠে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কৃষি অফিসে গেলেও কোনো কার্যকর পরামর্শ বা সহযোগিতা মিলছে না।

এ বিষয়ে তানোর উপজেলা কৃষি অফিসের মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় তার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। *বিশেষজ্ঞরা বলছেন*, সময়মতো যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে পোকার আক্রমণ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। একই সঙ্গে তারা কৃষকদের ভেজাল ও নকল কীটনাশক থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং যথাযথ তদারকির জন্য স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান, দ্রুত মাঠে কৃষি কর্মকর্তাদের সক্রিয় করা, লাইসেন্সবিহীন কীটনাশকের দোকান বন্ধ এবং কৃষকদের মাঝে কার্যকর ও নির্ভরযোগ্য কীটনাশকের সরবরাহ নিশ্চিত করা। তা না হলে, এ বছর তানোরে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।