সংবাদ শিরোনাম ::
শিবির নেতা হত্যার আসামী আ.লীগ নেতাকে অধ্যক্ষ পদে বসাতে জামায়াত নেতার দৌড়ঝাঁপ গোমস্তাপুরে আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত গোমস্তাপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে বেড়া ভাংচুর এবং গাছ কেটে ফেলা অতঃপর নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি নলছিটিতে গাঁজা,ইয়াবা ও নগদ টাকা সহ মাদক ব্যবসায়ী আটক অভিভাবকহীন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজ-জেলা প্রশাসনও নীরব-চলছে হযবরল অবস্থা বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আদিনা সরকারি কলেজে কর্মসুচি পালিত নাচোলে বিনামূল্যে কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণের শুভ উদ্বোধন  আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল সামসুল হকের নিয়ামতপুরে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু, ১ম দিন অনুপস্থিত ৩৮পরীক্ষার্থী নিয়ামতপুরে পানিতে ডুবে প্রাণ গেল শিশু নুসরাতের

শিবির নেতা হত্যার আসামী আ.লীগ নেতাকে অধ্যক্ষ পদে বসাতে জামায়াত নেতার দৌড়ঝাঁপ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ ১৬৩ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
২০২৪ সালের ০৫ আগষ্ট থেকে প্রায় ১০ মাস ধরে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও শিবির নেতা তুহিন হত্যা মামলার আসামী এজাবুল হক বুলি। অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রশিবির হত্যায় কারাবাস থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর কলেজে উপস্থিত না হলেও বেতন তুলেছিলেন নিয়মিতই। এদিকে, দীর্ঘ অনুপস্থিতির মধ্যেই তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগ তুলে তাকে স্থায়ী বরখাস্তের দাবি জানান কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

এমন অবস্থায় সেই পলাতক অধ্যক্ষ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এজাবুল হক বুলি দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস পরে হঠাৎ উপস্থিত হয়েছেন কলেজে। অভিযোগ উঠেছে, তাকে স্বপদে বসাতে কলেজে উপস্থিত হয়েছিলেন, সাবেক এমপি ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর লতিফুর রহমান। সেই আ.লীগ নেতাকে অধ্যক্ষ হিসেবে বসাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তিনি। এমনকি এনিয়ে কলেজে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকদের সাথে সভাও করেছেন জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান। এসময় তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করলে সকলের উপস্থিতিতে কয়েকজন শিক্ষককে উচ্চস্বরে ধমকও দেন তিনি।

কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতবছরের ০৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতন হলে গা ঢাকা দেন, সদর উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি। এরমধ্যেই তার বিরুদ্ধে ছাত্রশিবির নেতা তুহিন হত্যা মামলা হয়। এই মামলায় চলতি বছরের ১০ মার্চ আদালতে উপস্থিত হয়ে আগাম জামিন চাইলে তা না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। পরে এই মামলায় জামিন পান এজাবুল হক বুলি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুইজন কলেজ শিক্ষক ও এক কর্মচারী বলেন, গত ১০ মাস থেকে পলাতক ছিলেন আ.লীগ নেতা অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি। কিন্তু বেতন তুলেছিলেন ঠিকই। এখন হঠাৎ করেই গতকাল (২৫ জুন) কয়েক মিনিটের জন্য কলেজে এসেছিলেন। আজকে (২৬ জুন) দ্বিতীয় দিনের মতো কলেজে আসেন। এনিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিলে কলেজে উপস্থিত হন জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান। এমনকি শিক্ষকদের নিয়ে বসে পরীক্ষা কমিটি গঠনের বিষয়ে কথা বলেন। মূলত তিনি দূর্নীতিগ্রস্থ আ.লীগ নেতা এজাবুল হক বুলিকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন।

সভাচলাকালীন সময়ে প্রতিবাদ করলে শিক্ষকদের ধমকও দেন সাবেক এমপি ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর লতিফুর রহমান। এসময় তিনি তার কথামতো কমিটি গঠন করে চলার জন্য শিক্ষকদের নির্দেশনা দেন। ভিডিও ফুটেজেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। এদিকে, আ.লীগ নেতা ও শিবির হত্যা মামলার আসামীকে অধ্যক্ষ হিসেবে বিনা বাধায় বসাতে জামায়াত নেতার এমন কর্মকান্ডে হতবাক স্থানীয় বাসিন্দা ও কলেজ শিক্ষকরা।

কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে সভা শেষে বের হওয়ার সময় এবিষয়ে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর লতিফুর রহমান বলেন, এনিয়ে এই কলেজে আসা তিনবার হয়েছে। দীর্ঘদিন অধ্যক্ষ না থাকায় কলেজের লেখাপড়া বিঘ্ন হচ্ছে। তাই পরিবেশ ঠিক করার জন্য উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে ঠিক করার চেষ্টা করছি। এমনকি তাকে (অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি) তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার জন্য বলেছি। আ.লীগ নেতা এজাবুল হক বুলিকে স্বপদে বাসাতে দৌড়ঝাঁপের অভিযোগ অস্বীকার করেন জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান।

এনিয়ে সদর উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি বলেন, আমাকে পদে বসাতে নয়, তিনি এলাকার একজন অভিভাবক হিসেবে কলেজের পরিবেশ ঠিক করতেই এসেছিলেন। দীর্ঘদিন কেন অনুপস্থিত ছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাকে নিয়ে মব তৈরির কারনে আসতে পারিনি। আর ২০১৮ সালের পর থেকে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

শিবির নেতা হত্যার আসামী আ.লীগ নেতাকে অধ্যক্ষ পদে বসাতে জামায়াত নেতার দৌড়ঝাঁপ

আপডেট সময় : ১২:০৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
২০২৪ সালের ০৫ আগষ্ট থেকে প্রায় ১০ মাস ধরে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও শিবির নেতা তুহিন হত্যা মামলার আসামী এজাবুল হক বুলি। অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রশিবির হত্যায় কারাবাস থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর কলেজে উপস্থিত না হলেও বেতন তুলেছিলেন নিয়মিতই। এদিকে, দীর্ঘ অনুপস্থিতির মধ্যেই তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগ তুলে তাকে স্থায়ী বরখাস্তের দাবি জানান কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

এমন অবস্থায় সেই পলাতক অধ্যক্ষ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এজাবুল হক বুলি দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস পরে হঠাৎ উপস্থিত হয়েছেন কলেজে। অভিযোগ উঠেছে, তাকে স্বপদে বসাতে কলেজে উপস্থিত হয়েছিলেন, সাবেক এমপি ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর লতিফুর রহমান। সেই আ.লীগ নেতাকে অধ্যক্ষ হিসেবে বসাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তিনি। এমনকি এনিয়ে কলেজে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকদের সাথে সভাও করেছেন জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান। এসময় তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করলে সকলের উপস্থিতিতে কয়েকজন শিক্ষককে উচ্চস্বরে ধমকও দেন তিনি।

কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতবছরের ০৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতন হলে গা ঢাকা দেন, সদর উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি। এরমধ্যেই তার বিরুদ্ধে ছাত্রশিবির নেতা তুহিন হত্যা মামলা হয়। এই মামলায় চলতি বছরের ১০ মার্চ আদালতে উপস্থিত হয়ে আগাম জামিন চাইলে তা না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। পরে এই মামলায় জামিন পান এজাবুল হক বুলি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুইজন কলেজ শিক্ষক ও এক কর্মচারী বলেন, গত ১০ মাস থেকে পলাতক ছিলেন আ.লীগ নেতা অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি। কিন্তু বেতন তুলেছিলেন ঠিকই। এখন হঠাৎ করেই গতকাল (২৫ জুন) কয়েক মিনিটের জন্য কলেজে এসেছিলেন। আজকে (২৬ জুন) দ্বিতীয় দিনের মতো কলেজে আসেন। এনিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিলে কলেজে উপস্থিত হন জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান। এমনকি শিক্ষকদের নিয়ে বসে পরীক্ষা কমিটি গঠনের বিষয়ে কথা বলেন। মূলত তিনি দূর্নীতিগ্রস্থ আ.লীগ নেতা এজাবুল হক বুলিকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন।

সভাচলাকালীন সময়ে প্রতিবাদ করলে শিক্ষকদের ধমকও দেন সাবেক এমপি ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর লতিফুর রহমান। এসময় তিনি তার কথামতো কমিটি গঠন করে চলার জন্য শিক্ষকদের নির্দেশনা দেন। ভিডিও ফুটেজেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। এদিকে, আ.লীগ নেতা ও শিবির হত্যা মামলার আসামীকে অধ্যক্ষ হিসেবে বিনা বাধায় বসাতে জামায়াত নেতার এমন কর্মকান্ডে হতবাক স্থানীয় বাসিন্দা ও কলেজ শিক্ষকরা।

কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে সভা শেষে বের হওয়ার সময় এবিষয়ে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর লতিফুর রহমান বলেন, এনিয়ে এই কলেজে আসা তিনবার হয়েছে। দীর্ঘদিন অধ্যক্ষ না থাকায় কলেজের লেখাপড়া বিঘ্ন হচ্ছে। তাই পরিবেশ ঠিক করার জন্য উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে ঠিক করার চেষ্টা করছি। এমনকি তাকে (অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি) তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার জন্য বলেছি। আ.লীগ নেতা এজাবুল হক বুলিকে স্বপদে বাসাতে দৌড়ঝাঁপের অভিযোগ অস্বীকার করেন জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান।

এনিয়ে সদর উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি বলেন, আমাকে পদে বসাতে নয়, তিনি এলাকার একজন অভিভাবক হিসেবে কলেজের পরিবেশ ঠিক করতেই এসেছিলেন। দীর্ঘদিন কেন অনুপস্থিত ছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাকে নিয়ে মব তৈরির কারনে আসতে পারিনি। আর ২০১৮ সালের পর থেকে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই।