সংবাদ শিরোনাম ::
তারেক রহমানের একত্রিশ দফার লিফলেট বিতরণ করেন আব্দুস সালাম তুহিন  চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ এর বিএনপির এমপি পদপ্রার্থী ইঞ্জিঃ মাসুদের বাড়ি -বাড়ি গিয়ে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ভুয়া ফেসবুক পেইজে গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদ মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাজনের সুশাসনের ডাক: রাজশাহী-৫ এ জামায়াত প্রার্থী নুরজ্জামান লিটনের গণসংযোগ ও সমাবেশ। গোদাগাড়ীতে আটক সোনার বারকে ঘিরে ধোঁয়াশা তানোরে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মিলন মেলা নাইস গার্ডেন পার্কে অনুষ্ঠিত হবে আপনারা সকলে আমন্ত্রিত! গোমস্তাপুর আড্ডা থেকে নিখোঁজের দেড় মাসেও সন্ধান মেলেনি আজাহারের রাজশাহী-৬: বিএনপির মনোনয়ন যুদ্ধে এগিয়ে কে? বিদ্যুৎ সার্কিটে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে জামায়াতের সহায়তা প্রদান 📰 রাজশাহী-৫ আসনে গণজোয়ার: বেলপুকুরে জামায়াত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা

তানোরে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বোতলে স্বপ্নের বাড়ি বানালেন আলমগীর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:০০:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান : স্বপ্নের বাড়ি বানানো অনেকেরই সাধ, তবে সাধ্য থাকে না সবার। কিন্তু রাজশাহীর তানোর উপজেলার আলমগীর হোসেন সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন। পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করে স্বল্প খরচে তিনি নির্মাণ করেছেন ব্যতিক্রমী একটি ঘর, যা এখন সবার কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে।রাজশাহীর তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের ভাগনা গ্রামের এই প্রবাসফেরত আলমগীর হোসেন নিজের অভিজ্ঞতা ও সৃষ্টিশীলতা দিয়ে ২৫ হাজার পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তৈরি করেছেন একটি বাড়ি।

বাড়িটিতে রয়েছে দুইটি বেডরুম, একটি বাথরুম ও একটি টয়লেট। কাঠ, সিমেন্ট, বালি ও রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে নির্মিত এই বাড়িটি ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ।আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বিদেশে কাজ করার সময় ইউটিউবে প্লাস্টিক বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণের একটি ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হই। দেশে ফিরে নিজেই পরিকল্পনা করে বাড়িটি নির্মাণ করি। ১২ হাজার টাকা খরচ করে দোকান ও এলাকা ঘুরে ২৫ হাজার বোতল সংগ্রহ করেছি।’তিনি আরও জানান, ‘এই বাড়িটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। সাধারণ নির্মাণে একই মাপের একটি বাড়ি করতে খরচ হতো ৬-৭ লাখ টাকা।’

বাড়িটি নির্মাণে সময় লেগেছে প্রায় ৬ মাস। প্রতিটি বোতলের ভেতরে বালি ও মাটি ভরে ইটের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব বোতল সিমেন্ট দিয়ে একত্রে গেঁথে তৈরি করা হয়েছে দেয়াল ও পিলার। উপরে টিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। আলমগীর দাবি করেন, বাড়িটি ভূমিকম্প প্রতিরোধী ও বুলেটপ্রুফ।

স্থানীয়রা বলছেন, শুরুতে বিষয়টি পাগলামি মনে হলেও এখন চোখের সামনে একটি পরিপূর্ণ বাড়ি দেখে বিস্মিত তারা। স্বল্প খরচে এমন ব্যতিক্রমী ও টেকসই নির্মাণ সবার মাঝে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে।

তানোর উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, ‘এধরনের নির্মাণে খরচ কিছুটা কম হয়, এটা ঠিক। তবে এটি কতটা টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব তা পরীক্ষা না করে বলা সম্ভব নয়। তবে আলমগীরের কাজ নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী।’

তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন, ‘প্লাস্টিক সাধারণত পরিবেশ দূষণ করে। কিন্তু আলমগীর যেভাবে তা কাজে লাগিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ।’

এই প্লাস্টিক বোতলের বাড়িটি শুধু ব্যতিক্রমী নির্মাণশৈলী নয়, বরং পরিবেশ-সচেতনতা, সাশ্রয়ী গৃহনির্মাণ এবং নতুন ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠেছে তানোরবাসীর কাছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

তানোরে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বোতলে স্বপ্নের বাড়ি বানালেন আলমগীর

আপডেট সময় : ০২:০০:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫

 

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান : স্বপ্নের বাড়ি বানানো অনেকেরই সাধ, তবে সাধ্য থাকে না সবার। কিন্তু রাজশাহীর তানোর উপজেলার আলমগীর হোসেন সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন। পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করে স্বল্প খরচে তিনি নির্মাণ করেছেন ব্যতিক্রমী একটি ঘর, যা এখন সবার কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে।রাজশাহীর তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের ভাগনা গ্রামের এই প্রবাসফেরত আলমগীর হোসেন নিজের অভিজ্ঞতা ও সৃষ্টিশীলতা দিয়ে ২৫ হাজার পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তৈরি করেছেন একটি বাড়ি।

বাড়িটিতে রয়েছে দুইটি বেডরুম, একটি বাথরুম ও একটি টয়লেট। কাঠ, সিমেন্ট, বালি ও রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে নির্মিত এই বাড়িটি ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ।আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বিদেশে কাজ করার সময় ইউটিউবে প্লাস্টিক বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণের একটি ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হই। দেশে ফিরে নিজেই পরিকল্পনা করে বাড়িটি নির্মাণ করি। ১২ হাজার টাকা খরচ করে দোকান ও এলাকা ঘুরে ২৫ হাজার বোতল সংগ্রহ করেছি।’তিনি আরও জানান, ‘এই বাড়িটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। সাধারণ নির্মাণে একই মাপের একটি বাড়ি করতে খরচ হতো ৬-৭ লাখ টাকা।’

বাড়িটি নির্মাণে সময় লেগেছে প্রায় ৬ মাস। প্রতিটি বোতলের ভেতরে বালি ও মাটি ভরে ইটের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব বোতল সিমেন্ট দিয়ে একত্রে গেঁথে তৈরি করা হয়েছে দেয়াল ও পিলার। উপরে টিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। আলমগীর দাবি করেন, বাড়িটি ভূমিকম্প প্রতিরোধী ও বুলেটপ্রুফ।

স্থানীয়রা বলছেন, শুরুতে বিষয়টি পাগলামি মনে হলেও এখন চোখের সামনে একটি পরিপূর্ণ বাড়ি দেখে বিস্মিত তারা। স্বল্প খরচে এমন ব্যতিক্রমী ও টেকসই নির্মাণ সবার মাঝে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে।

তানোর উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, ‘এধরনের নির্মাণে খরচ কিছুটা কম হয়, এটা ঠিক। তবে এটি কতটা টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব তা পরীক্ষা না করে বলা সম্ভব নয়। তবে আলমগীরের কাজ নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী।’

তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন, ‘প্লাস্টিক সাধারণত পরিবেশ দূষণ করে। কিন্তু আলমগীর যেভাবে তা কাজে লাগিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ।’

এই প্লাস্টিক বোতলের বাড়িটি শুধু ব্যতিক্রমী নির্মাণশৈলী নয়, বরং পরিবেশ-সচেতনতা, সাশ্রয়ী গৃহনির্মাণ এবং নতুন ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠেছে তানোরবাসীর কাছে।