সংবাদ শিরোনাম ::
তারেক রহমানের একত্রিশ দফার লিফলেট বিতরণ করেন আব্দুস সালাম তুহিন  চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ এর বিএনপির এমপি পদপ্রার্থী ইঞ্জিঃ মাসুদের বাড়ি -বাড়ি গিয়ে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ভুয়া ফেসবুক পেইজে গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদ মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাজনের সুশাসনের ডাক: রাজশাহী-৫ এ জামায়াত প্রার্থী নুরজ্জামান লিটনের গণসংযোগ ও সমাবেশ। গোদাগাড়ীতে আটক সোনার বারকে ঘিরে ধোঁয়াশা তানোরে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মিলন মেলা নাইস গার্ডেন পার্কে অনুষ্ঠিত হবে আপনারা সকলে আমন্ত্রিত! গোমস্তাপুর আড্ডা থেকে নিখোঁজের দেড় মাসেও সন্ধান মেলেনি আজাহারের রাজশাহী-৬: বিএনপির মনোনয়ন যুদ্ধে এগিয়ে কে? বিদ্যুৎ সার্কিটে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে জামায়াতের সহায়তা প্রদান 📰 রাজশাহী-৫ আসনে গণজোয়ার: বেলপুকুরে জামায়াত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা

তানোরে প্রযুক্তি ও পরিবেশের পরিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীন খেলাধুলা!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৩৩ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান : কালের বিবর্তনে রাজশাহীর তানোর উপজেলার গ্রাম অঞ্চল থেকে হারিয়ে গেছে গ্রামীন জনগোষ্ঠীর শিশু কিশোর কিশোরীদের জনপ্রিয় সব গ্রামীন গেলা ধুলা। খেলার মাঠ- ঘাটসহ পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে সাথে কর্মব্যস্ততা ও আধুনিক প্রযুক্তির কারনে গ্রামীন জনপদের ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেলা ধুলা বিপুপ্ত হয়ে গেছে। ফলে, গ্রামীন জনপদের গ্রামীর জনগোষ্ঠীর শিশু কিশোর কিশোরীদের মাঝে এসব খেলা ধুলার চিত্র এখন চোখে পড়েনা। তানোরে ৯০ এর দশকের আগ পর্যন্ত বাড়ির সামনের (খৈলানে) উঠানে বা আনাচে কানাচে দেকা মিলতো এসব গ্রামীন জনগোষ্ঠীর শিশু কিশোর কিশোরীদের মধ্যে গ্রামীন জনপদের এসব খেলা ধুলা।

একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই কমতে থাকে এসব গ্রামীন জনগোষ্ঠীর শিশু কিশোর কিশোরীদের মধ্যে এসব খেলা ধুলা। বর্তমানে এসব খেলা ধুলা এখন বিলুপ্ত। এখন মাঠে ঘাটে শিশু কিশোর কিশোরী থেকে শুরু করে যুবক যুবতীসহ সকল বয়সী মানুষের হাতে হাতে আধুনিক প্রযুক্তির মোবাইল ফোন পৌছে গেছে। মাঠে ঘাটে এখন চোখে পড়ে শিশু কিশোর কিশোরী থেকে শুরু করে যুবক যুবতীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুস মোবাইল ফোনে বিভিন্ন গেম্সসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে ব্যস্থ রয়েছেন। কোথাও কোথাও চোখে পড়ে এক সাথে ৪ জন বা ২ বসে মোবাইল ফোনে লুডু খেলার দৃশ্য।

আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের এসব জনপ্রিয় খেলাধুলার   মধ্যে রয়েছে- কানামাছি, দাঁড়িয়াবান্ধা, ডাংগুটি, মারবেল ঘোড়া দৌড়, গোল্লাছুট, চারগুটি, লাঠি খেলা, লং জাম্প, সাত পাতা, ফুল টোক্কা, মোরগ যুদ্ধ, হাডুডু। গ্রামে আগের মতো চোখে পড়ে না ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা।

তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রামের মুরুব্বীদের সাথে আলাপচারিতায় তারা বলেন, আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় ও প্রযুক্তির বিকাশে ইতিহাস থেকে হারিয়ে গেছে  জনপ্রিয় গ্রামীণ সব খেলাধুলা। সময়ের বিবর্তনে মাঠ, বিল-ঝিল ভড়াট হয়ে প্রতিনিয়ত হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী এসব খেলাধুলা । একটা সময় ছিল গ্রাম থেকে শুরু করে শহর পর্যন্ত শিশু ও যুবকরা পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলায় অভ্যস্থ ছিল।

অবসরে দলবেঁধে খেলতো নানা প্রকারের খেলা। বাড়ির উঠান থেকে শুরু করে রাস্তার আনাচে-কানাচে, খোলা মাঠে কম পরিসরেই খেলা যেত। তারা বলেন এখন ছেলে-মেয়েরা সবাই মোবাইলে আসক্ত।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান সময়ে গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের শিশুরা ঘরের এক কোণে বসে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ভিডিও গেম,কার্টুন নিয়ে সময় পার করে থাকে। এর ফলে তাদের শারিরিকসহ মেধার বিকাশও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এক সময় গ্রামবাংলার ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা ও বয়স্ক ব্যক্তিরা তাদের নানান কর্মব্যস্ততার ফাঁকে বিভিন্ন ধরনের খেলা করে সময় কাটাতেন।

হারিয়ে গিয়েছে আমাদের দেশের গ্রামীণ বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য ও বিনোদনমূলক এসব খেলা।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দিন দিন খেলার মাঠের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, গ্রামের মানুষ বেকারত্বের ফলে প্রতিনিয়ত শহরমুখী হতে বাধ্য হচ্ছে, শহরে খেলার মাঠ গ্রামের তুলনায় অনেকংশেই কম, শিশুদের মোবাইল ব্যবহারে প্রবনতা বাড়ছে, স্কুল-কলেজে বছরে কয়েকদিনের জন্য ক্রীড়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করে, পরে আর কোন খেলার আয়োজন চোখে পড়ে না। বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমাতে হলে, গ্রামীণ  এ সব খেলাধুলার প্রতি  তাদের আগ্রহ বাড়াতে হবে, শিক্ষক থেকে শুরু করে পরিবার, সবারই উচিৎ  গ্রামীন ঐতিহ্যবাহী এসব খেলাধুলার প্রতি তাদের উৎসাহিত করা। শিশুদের অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তির ফলে তারা একটা সময় গিয়ে একগুয়েমি স্বভাবের হয়ে ওঠে। মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের গেম খেলে তারা আরও বেশি খারাপ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, কিশোর গ্যাং, শিশু অপরাধ সবই এই মোবাইল আসক্তির ফল। যদি তাদের মোবাইল আসক্তি দুর করতে হয় তাহলে গ্রামীণ এ সব খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই।  আমাদের সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে,  তাহলে যেমন আমাদের এ সব খেলাধুলাও বিলুপ্ত হবে না, আবার  আমাদের শিশুদেরও মেধার বিকাশ ঘটবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

তানোরে প্রযুক্তি ও পরিবেশের পরিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীন খেলাধুলা!

আপডেট সময় : ১০:৪৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান : কালের বিবর্তনে রাজশাহীর তানোর উপজেলার গ্রাম অঞ্চল থেকে হারিয়ে গেছে গ্রামীন জনগোষ্ঠীর শিশু কিশোর কিশোরীদের জনপ্রিয় সব গ্রামীন গেলা ধুলা। খেলার মাঠ- ঘাটসহ পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে সাথে কর্মব্যস্ততা ও আধুনিক প্রযুক্তির কারনে গ্রামীন জনপদের ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেলা ধুলা বিপুপ্ত হয়ে গেছে। ফলে, গ্রামীন জনপদের গ্রামীর জনগোষ্ঠীর শিশু কিশোর কিশোরীদের মাঝে এসব খেলা ধুলার চিত্র এখন চোখে পড়েনা। তানোরে ৯০ এর দশকের আগ পর্যন্ত বাড়ির সামনের (খৈলানে) উঠানে বা আনাচে কানাচে দেকা মিলতো এসব গ্রামীন জনগোষ্ঠীর শিশু কিশোর কিশোরীদের মধ্যে গ্রামীন জনপদের এসব খেলা ধুলা।

একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই কমতে থাকে এসব গ্রামীন জনগোষ্ঠীর শিশু কিশোর কিশোরীদের মধ্যে এসব খেলা ধুলা। বর্তমানে এসব খেলা ধুলা এখন বিলুপ্ত। এখন মাঠে ঘাটে শিশু কিশোর কিশোরী থেকে শুরু করে যুবক যুবতীসহ সকল বয়সী মানুষের হাতে হাতে আধুনিক প্রযুক্তির মোবাইল ফোন পৌছে গেছে। মাঠে ঘাটে এখন চোখে পড়ে শিশু কিশোর কিশোরী থেকে শুরু করে যুবক যুবতীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুস মোবাইল ফোনে বিভিন্ন গেম্সসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে ব্যস্থ রয়েছেন। কোথাও কোথাও চোখে পড়ে এক সাথে ৪ জন বা ২ বসে মোবাইল ফোনে লুডু খেলার দৃশ্য।

আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের এসব জনপ্রিয় খেলাধুলার   মধ্যে রয়েছে- কানামাছি, দাঁড়িয়াবান্ধা, ডাংগুটি, মারবেল ঘোড়া দৌড়, গোল্লাছুট, চারগুটি, লাঠি খেলা, লং জাম্প, সাত পাতা, ফুল টোক্কা, মোরগ যুদ্ধ, হাডুডু। গ্রামে আগের মতো চোখে পড়ে না ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা।

তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রামের মুরুব্বীদের সাথে আলাপচারিতায় তারা বলেন, আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় ও প্রযুক্তির বিকাশে ইতিহাস থেকে হারিয়ে গেছে  জনপ্রিয় গ্রামীণ সব খেলাধুলা। সময়ের বিবর্তনে মাঠ, বিল-ঝিল ভড়াট হয়ে প্রতিনিয়ত হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী এসব খেলাধুলা । একটা সময় ছিল গ্রাম থেকে শুরু করে শহর পর্যন্ত শিশু ও যুবকরা পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলায় অভ্যস্থ ছিল।

অবসরে দলবেঁধে খেলতো নানা প্রকারের খেলা। বাড়ির উঠান থেকে শুরু করে রাস্তার আনাচে-কানাচে, খোলা মাঠে কম পরিসরেই খেলা যেত। তারা বলেন এখন ছেলে-মেয়েরা সবাই মোবাইলে আসক্ত।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান সময়ে গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের শিশুরা ঘরের এক কোণে বসে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ভিডিও গেম,কার্টুন নিয়ে সময় পার করে থাকে। এর ফলে তাদের শারিরিকসহ মেধার বিকাশও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এক সময় গ্রামবাংলার ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা ও বয়স্ক ব্যক্তিরা তাদের নানান কর্মব্যস্ততার ফাঁকে বিভিন্ন ধরনের খেলা করে সময় কাটাতেন।

হারিয়ে গিয়েছে আমাদের দেশের গ্রামীণ বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য ও বিনোদনমূলক এসব খেলা।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দিন দিন খেলার মাঠের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, গ্রামের মানুষ বেকারত্বের ফলে প্রতিনিয়ত শহরমুখী হতে বাধ্য হচ্ছে, শহরে খেলার মাঠ গ্রামের তুলনায় অনেকংশেই কম, শিশুদের মোবাইল ব্যবহারে প্রবনতা বাড়ছে, স্কুল-কলেজে বছরে কয়েকদিনের জন্য ক্রীড়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করে, পরে আর কোন খেলার আয়োজন চোখে পড়ে না। বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমাতে হলে, গ্রামীণ  এ সব খেলাধুলার প্রতি  তাদের আগ্রহ বাড়াতে হবে, শিক্ষক থেকে শুরু করে পরিবার, সবারই উচিৎ  গ্রামীন ঐতিহ্যবাহী এসব খেলাধুলার প্রতি তাদের উৎসাহিত করা। শিশুদের অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তির ফলে তারা একটা সময় গিয়ে একগুয়েমি স্বভাবের হয়ে ওঠে। মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের গেম খেলে তারা আরও বেশি খারাপ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, কিশোর গ্যাং, শিশু অপরাধ সবই এই মোবাইল আসক্তির ফল। যদি তাদের মোবাইল আসক্তি দুর করতে হয় তাহলে গ্রামীণ এ সব খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই।  আমাদের সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে,  তাহলে যেমন আমাদের এ সব খেলাধুলাও বিলুপ্ত হবে না, আবার  আমাদের শিশুদেরও মেধার বিকাশ ঘটবে।