সংবাদ শিরোনাম ::
ঈদুল আযহা’র শুভেচ্ছা জানালেন বিএনপি নেতা মোঃ আনোয়ার হোসেন ধর্ম প্রাণ মুসলিমদের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন রাজশাহী বিভাগীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ গোমস্তাপুরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী জেলা শাখার উদ্যোগে ওয়ার্ড সভাপতি সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত গোমস্তাপুরে অজ্ঞান পার্টি মেসার্স ভাই ভাই ভ্যারাইটিজ এন্ড ক্রোকারীজ এর ২০ হাজার টাকা নিয়ে গেলো লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং লিবার্টির সভাপতি হলেন নবীনগরের শরিফুল ইসলাম গোমস্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত গোমস্তাপুরে নদীতে গোসলে নেমে যুবকের মৃত্যু গোমস্তাপুরে এক্সটেন্ডেড কমিউনিটি ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট-ড্রট (ইসিসিসিপি-ড্রট)MAR স্থাপনের উদ্বোধন নাচোলে কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের আয়োজনে পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত

রাজশাহীর ৯১৩ চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০৯:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫ ৩০ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান :

রাজশাহী বিভাগের ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ দিয়েছে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর।  বৃহস্পতিবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ে এ সুপারিশ পাঠিয়েছে তারা। চালকলের বিরুদ্ধে কী শাস্তি নেওয়া হবে তা ঠিক করবে মন্ত্রণালয়।

মূলত সরকারি গুদামে চাল দেওয়ার চুক্তি না করা ও ঠিকমতো চাল না দেওয়ার  কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের লাইসেন্স বাতিলে সুপারিশ করা হয়েছে।

রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারি গুদামে চাল দেওয়ার চুক্তি না করা ও ঠিকমতো চাল না দেওয়ায় ৯১৩ মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। এদের মধ্যে চুক্তিযোগ্য ছিল কিন্তু চাল দেওয়ার চুক্তি করেনি এমন মিলের সংখ্যা ৭৫১টি। এর মধ্যে ৪৫ টি অটো রাইস মিলস। আর বাকিগুলো হাসকিং মিলস। এছাড়া চুক্তি করে গুদামে চাল দেয়নি এমন মিলের সংখ্যা ১৬২টি। এর মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ চাল দিয়েছে এমন মিলের সংখ্যা ৩০টি। আর ৫০ শতাংশ চাল দিয়েছে এমন মিলের সংখ্যা ৭১টি।

এ বিষয়ে রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সহকারি উপপরিচালক ওমর ফারুক বলেন, ‘বিভাগের যেসব মিল চাল দেয়নি বা চুক্তিযোগ্য ছিল কিন্তু চুক্তি করেনি এমন মিল সংখ্যার একটি তালিকা আমরা করেছি। রাজশাহী বিভাগের ৯১৩টি মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা সুপারিশ করেছি। তাদের বিরুদ্ধে কি ধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা মন্ত্রণালয় ঠিক করবে।’

এ খাদ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘চুক্তিপত্র অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যারা ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ চাল দিয়েছে তাদের জামানত থেকে টাকা কেটে নিয়ে জরিমানা করার সুপারিশ করেছি। পাশাপাশি যারা চালই দেননি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছি। এক্ষেত্রে তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশনা আসলে সেটি আমরা কার্যকর করব।’

এদিকে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোতে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ধান-চাল সংগ্রহের সময়সীমা কয়কদফা বাড়ানো হলেও তাতেও কোনো সুফল আসেনি। যার ফলে লক্ষ্যমাত্রা না পূরণ করেই  সংগ্রহ অভিযান শেষ করেছে খাদ্য বিভাগ।

রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, আট জেলায় ৫৬ হাজার ৩৫৯ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৯৫ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র সাত শতাংশ। প্রতি মণ এক হাজার ৩২০ টাকা দরে সরকারি গুদামে বেশি ধান দেয়নি কৃষকরা। রাজশাহী অঞ্চলের হাট-বাজার ও মোকামে কৃষকরা ধান বিক্রি করেছে এক হাজার ৪৫০ টাকা দরে, যা সরকারি মূল্যের চেয়ে ১৩০ টাকা বেশি।

চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় এক লাখ ১১ হাজার ২৬৩ টন সিদ্ধ চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। মৌসুম শেষে সংগ্রহ হয়েছে ৯৪ দশমিক ৭০৭ টন। আতপ চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮৯১ টন। সংগ্রহ হয়েছে ১৯ হাজার ৫২৯ টন।

কৃষকরা বলছেন, সরকারি গুদামে ধান দেওয়ার পরিবেশ নেই। আবার দামও কম। সরকারি গুদামে বাকিতে ধান বিক্রি করতে হয়। টাকা পেতে ঝামেলা পোহাতে হয়। বিপরীতে হাট-বাজারে তারা নগদে ধান বিক্রি করতে পারেন।

খাদ্য বিভাগেরই বিভিন্ন সূত্র বলছে, সরকারি গুদামের দেওয়া মূল্যের সঙ্গে খোলা বাজারে চালের মূল্য বেশি হওয়ায় মিলারদের গুদামে পড়ে থাকা আগের বছরগুলোর পুরোনো চালই বেশি এসেছে সরকারি গুদামে। পুরোনো এসব চালের খাদ্য মূল্য, পুষ্টিমান ও ব্যবহারযোগ্যতা নতুন চালের তুলনায় অনেক কম। ক্রয় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গুদাম কর্মকর্তারা মানহীন এসব পুরনো চাল কিনে গুদামে ভরেছে। মিল মালিকরাও লাইসেন্স বাঁচাতে পুরনো চাল গুদামে দিয়েছেন। অনেক মিল মালিক ভারত থেকে আমদানি করা পুরোনো চাল গুদামে দিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

রাজশাহীর ৯১৩ চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ

আপডেট সময় : ০৫:০৯:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

 

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান :

রাজশাহী বিভাগের ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ দিয়েছে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর।  বৃহস্পতিবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ে এ সুপারিশ পাঠিয়েছে তারা। চালকলের বিরুদ্ধে কী শাস্তি নেওয়া হবে তা ঠিক করবে মন্ত্রণালয়।

মূলত সরকারি গুদামে চাল দেওয়ার চুক্তি না করা ও ঠিকমতো চাল না দেওয়ার  কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের লাইসেন্স বাতিলে সুপারিশ করা হয়েছে।

রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারি গুদামে চাল দেওয়ার চুক্তি না করা ও ঠিকমতো চাল না দেওয়ায় ৯১৩ মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। এদের মধ্যে চুক্তিযোগ্য ছিল কিন্তু চাল দেওয়ার চুক্তি করেনি এমন মিলের সংখ্যা ৭৫১টি। এর মধ্যে ৪৫ টি অটো রাইস মিলস। আর বাকিগুলো হাসকিং মিলস। এছাড়া চুক্তি করে গুদামে চাল দেয়নি এমন মিলের সংখ্যা ১৬২টি। এর মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ চাল দিয়েছে এমন মিলের সংখ্যা ৩০টি। আর ৫০ শতাংশ চাল দিয়েছে এমন মিলের সংখ্যা ৭১টি।

এ বিষয়ে রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সহকারি উপপরিচালক ওমর ফারুক বলেন, ‘বিভাগের যেসব মিল চাল দেয়নি বা চুক্তিযোগ্য ছিল কিন্তু চুক্তি করেনি এমন মিল সংখ্যার একটি তালিকা আমরা করেছি। রাজশাহী বিভাগের ৯১৩টি মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা সুপারিশ করেছি। তাদের বিরুদ্ধে কি ধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা মন্ত্রণালয় ঠিক করবে।’

এ খাদ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘চুক্তিপত্র অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যারা ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ চাল দিয়েছে তাদের জামানত থেকে টাকা কেটে নিয়ে জরিমানা করার সুপারিশ করেছি। পাশাপাশি যারা চালই দেননি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছি। এক্ষেত্রে তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশনা আসলে সেটি আমরা কার্যকর করব।’

এদিকে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোতে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ধান-চাল সংগ্রহের সময়সীমা কয়কদফা বাড়ানো হলেও তাতেও কোনো সুফল আসেনি। যার ফলে লক্ষ্যমাত্রা না পূরণ করেই  সংগ্রহ অভিযান শেষ করেছে খাদ্য বিভাগ।

রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, আট জেলায় ৫৬ হাজার ৩৫৯ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৯৫ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র সাত শতাংশ। প্রতি মণ এক হাজার ৩২০ টাকা দরে সরকারি গুদামে বেশি ধান দেয়নি কৃষকরা। রাজশাহী অঞ্চলের হাট-বাজার ও মোকামে কৃষকরা ধান বিক্রি করেছে এক হাজার ৪৫০ টাকা দরে, যা সরকারি মূল্যের চেয়ে ১৩০ টাকা বেশি।

চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় এক লাখ ১১ হাজার ২৬৩ টন সিদ্ধ চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। মৌসুম শেষে সংগ্রহ হয়েছে ৯৪ দশমিক ৭০৭ টন। আতপ চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮৯১ টন। সংগ্রহ হয়েছে ১৯ হাজার ৫২৯ টন।

কৃষকরা বলছেন, সরকারি গুদামে ধান দেওয়ার পরিবেশ নেই। আবার দামও কম। সরকারি গুদামে বাকিতে ধান বিক্রি করতে হয়। টাকা পেতে ঝামেলা পোহাতে হয়। বিপরীতে হাট-বাজারে তারা নগদে ধান বিক্রি করতে পারেন।

খাদ্য বিভাগেরই বিভিন্ন সূত্র বলছে, সরকারি গুদামের দেওয়া মূল্যের সঙ্গে খোলা বাজারে চালের মূল্য বেশি হওয়ায় মিলারদের গুদামে পড়ে থাকা আগের বছরগুলোর পুরোনো চালই বেশি এসেছে সরকারি গুদামে। পুরোনো এসব চালের খাদ্য মূল্য, পুষ্টিমান ও ব্যবহারযোগ্যতা নতুন চালের তুলনায় অনেক কম। ক্রয় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গুদাম কর্মকর্তারা মানহীন এসব পুরনো চাল কিনে গুদামে ভরেছে। মিল মালিকরাও লাইসেন্স বাঁচাতে পুরনো চাল গুদামে দিয়েছেন। অনেক মিল মালিক ভারত থেকে আমদানি করা পুরোনো চাল গুদামে দিয়েছে।